মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল নিয়ে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে কারফিউ জারির পর সিলেটের তামাবিল-মেঘালয়ের ডাউকি সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাতায়াত সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় ইমিগ্রেশন বিভাগ।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ভ্রমণে যেতে চাইলে তাদের ফেরত দেয়া হয়।ভারত থেকেও কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
বিষয়টি নিশ্চিত করছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
ইমিগ্রেশন ল্যান্ড অ্যান্ড সি পোর্টের এসপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার বাংলাদেশের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল বর্ডারে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়। বাংলাদেশ থেকে ইমিগ্রেশন শেষে ভ্রমণকারীরা ভারতে প্রবেশ করলে সেখান থেকে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে ভ্রমণকারীদের বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন বাতিল করেন তারা।
তামাবিল স্থল বন্দরের সহকারী পরিচালক ট্রাফিক পার্থ ঘোষ জানান, দু’দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে।
পর্যটকরা বিপাকে
ইউএনবি জানায়, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আচমকা এই বাধায় বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। আগে থেকে না জানায় সকাল থেকে অনেক পর্যটক তামাবিলে জড়ো হন।
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হলেও ভারতীয় ইমিগ্রেশন আটকে দেয়। ফলে ভারতের ডাউকি থেকে ফিরে আসতে হয় তাদের।
সিলেটের তামাবিল দিয়ে ডাউকি হয়ে সাধারণত ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বেড়াতে যান বাংলাদেশিরা। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় পর্যটকদের ভিড় ছিল তুলনামূলক বেশি। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে কারফিউ জারি করা হয়।
সিলেটের তামাবিল কাস্টমসের উপ-পুলিশ পরিদর্শক রমজান মিয়া বলেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে আমরা শতাধিক যাত্রীকে ভারতে যেতে দেই। তবে কিচ্ছুক্ষণ পরই তারা ভারতের কাস্টমস থেকে ফিরে আসেন। তাদের যেতে দেয়া হচ্ছে না বলে জানান তারা। এর কিছুক্ষণ পর ভারতীয় কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা এসে মেঘালয়ের অস্থিরতার কারণে কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না বলে জানান এবং আজকে আর যাত্রী না ছাড়তে আমাদের অনুরোধ করেন।
শিলংয়ে বেড়াতে যাওয়ার জন্য শুক্রবার সকালেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তামাবিলে হাজির হন কুমিল্লার সাদ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ডাউকিতে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখার পর ভারতীয় কাস্টমস কর্মকর্তারা আমাদের দেশে ফিরিয়ে দেন। এ ব্যাপারে তারা আগে থেকে কিছু জানায়নি। ফলে আমাদের মতো অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ভারতের ডাউকি কাস্টমস অফিসের কাস্টমস কর্মকর্তা ডেকলিন রেনজা বলেন, কারফিউ এর কারণে শিলংয়ে হোটেল-দোকানপাট সব বন্ধ আছে। পর্যটকদের দুর্ভোগ আর নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাদের যেতে দিচ্ছি না। পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার বাংলাদেশি পর্যটকরা যেতে পারবেন।
শুক্রবার তামাবিল দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার তিনি এ সফর বাতিল করেন।
ভারতে নাগরিকত্ব বিল (এনআরসি) পাস হওয়ার পর থেকে আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয় রাজ্যে বিক্ষোভ, সহিংসতার পর কারফিউ জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে তারা ভ্রমণকারীদের যাতায়াত সাময়িক বন্ধ রেখেছে।